ইতিহাস

ইতিহাস ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস গাব্রিয়েল গাইন ( প্রধান শিক্ষক) বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট সংঘ পরিচালিত বরিশাল সদরের ১১নং ওয়ার্ডে ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয় অবস্থিত । ১৯১৪ সালের ২০ শে জানুয়ারি ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালক উচ্চ বিদ্যালয় আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়। যদিও প্রাথমিক অবস্থায় বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক ইংরেজি জুনিয়র বিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল কিন্তু বর্তমানে বাংলা মাধ্যম হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। বিদ্যালয়টি ইতিহাস প্রসিদ্ধ ব্যাক্তি ড.উইলিয়াম কেরী, লন্ডন ব্যাপ্টিস্ট সোসাইটির মিশনারী ১৯১৪ সালে ২০ জানুয়ারি স্কুল এবং ২৪ জানুয়ারি ছাত্রাবাসে ছাত্র রাখার মাধ্যমে শুরু করেন, বিদ্যালয় কার্যক্রম শুরুর পূর্বে বিদ্যালয় ভবন ও ছাত্রবাস ভবন ১৯১৩ সালের নভেম্বর মাসের মাধ্যে সমাপ্ত হয়। ইংল্যান্ডের একজন স্বনাম ধন্য ব্যবসায়ী রবার্ট আরমিংটন সাহেবের আর্থিক অনুদানে বিদ্যালয় ভবন এবং ছাত্রবাস ভবন নির্মিত হয়। তদানীস্তন প্রধান শিক্ষক ছিলেন মি: ডবিøউ ই কান্স। । প্রথম বছর ১১৬ জন ছাত্র ভর্তি হয়। তম্মধ্যে ৯২ জন খ্রিষ্টান, ৩ জন ব্রাহ্মন, ১৮ জন হিন্দু, ২ জন মুসলিম, ৩ জন বৌদ্ধ এবং ১ জন গারো উপজাতি ছাত্র ছিলেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সূচনা লগ্নে থেকেই জাতিধর্ম নির্বিশেষে মিলনমেলা ও সম্প্রীতির উত্তম উদাহরণ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।  বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল তৎকালীন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠি, তাদের কুসংস্কার ও অজ্ঞতার নাগপাশে জর্জরিত জনগোষ্ঠি সহ প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল ও দূর্গম পাহাড়ী অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়। বিশেষ করে অর্থকষ্টে থাকা জনগোষ্ঠি যাদের পড়াশোনার সুযোগ ছিল না বা থাকলেও অত্যন্ত নগন্য, তারা ছাত্রাবাসে থাকা খাওয়া এবং বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে, পাশাপাশি অন্য সকল ছাত্রদের জন্য বিদ্যালয়টি উন্মুক্ত ছিল। তাই দেশের শিক্ষার বিস্তার ও দেশীয় অর্থনীতিতে এ বিদ্যালয়ের ভ’মিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য এ বিদ্যালয়ের প্রতি আমরা অত্যান্ত  ঋণী ও কৃতজ্ঞ।  এ বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা, সরকারের মন্ত্রী , বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সহ  দেশে ও উন্নত বিশ্বসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দক্ষতা ও সুনামের সাথে গুরুত্বপূর্ণ পদে সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন। নাম উল্লেখ করতে গেলে অনেকের নাম বাদ পড়ে যেতে পারে তাই নাম উল্লেখ করলাম না, কিন্তু সৃষ্টিকর্তা সকলের শ্রম ও সেবা দেখেছেন এবং পুরস্কৃত করবেন। 
অত্র বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দায়িতপ্রাপ্ত¡ প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকদের তালিকা প্রদান করা হলো। প্রধান শিক্ষকের নাম-শিক্ষাগত যোগ্যতা- দায়িত্ব কাল
১। মি. ডেভিড এ. কে. দেউরী
২। মিস. এল. বিশ্বাস (ভারপ্রাপ্ত)
৩। মি. জে এস ঘরামী 
৪। মি. এস. কে. মন্ডল (ভারপ্রাপ্ত) 
৫। মি. রুপচান বাড়ৈ
৬। মি. এস. কে. মন্ডল (ভারপ্রাপ্ত)
৭। মি. গাব্রিয়েল গাইন

বিদ্যালয়টি শুরুর দিকে বহু দিন সাধারন শিক্ষার পাশাপাশি  কারিগরি শিক্ষা ও কৃষি ভিত্তিক বাস্তব শিক্ষা, কাঠের কাজের শিক্ষা প্রদান করা হত যা তৎকালীন সময়ে এক অনান্য দৃষ্টান্ত ছিল। পরবর্তীতে এর দায়িত্ব থাকা এন. ঊরাল এবং মি. বি.সি সরকারের অবসর গ্রহণের পর এ কার্যক্রমে ভাটা পড়ে। বর্তমানে শুধু সাধারণ শিক্ষা চালু রয়েছে। 
 পড়াশুনার পাশাপাশি সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে এ বিদ্যালয়ের সুনাম রয়েছে। ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, ভলিবল, ক্যারাম, দাবা, লুডু ও সাঁতার সহ সকল খেলাধুলার সুব্যবস্থা রয়েছে। উল্লেখ থাকে যে ফুটবলে স্কুল পর্যায়ে দেশ সেরা হওয়ার কৃতিত্ব রযেছে। লাইব্রেরী ও বিজ্ঞানাগারে যেমন রয়েছে বহুযুগের পুরানো বই, টাইপরাইটার, বিজ্ঞাগারের যন্ত্রপাতি তেমন রয়েছে নতুন যুগোপযুগি সংযোজন। নতুন পুরাতনের অপূর্ব মেলবন্ধন পরিলক্ষিত হবে । এখানে অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রচুর, বৃক্ষরাজির সমাহার রয়েছে এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য বিদ্যালয়ের সামনের চন্দন গাছটি লোকমুখে শোনা, এটি  ১ম বিশ্বযুদ্ধের সময় শান্তির প্রতীক হিসেবে এটি রোপন করা হয়েছিল আজও বিভিন্ন ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে স্বগৌরবে দাড়িয়ে রয়েছে। তবে মিশন স্কুলে সাধারণত সকল প্রকার তথ্য সংগঠিত থাকলে ও এ গাছটি কে রোপন করেছেন, তার সঠিক তথ্য নেই। কিন্তু চন্দন গাছটি যে বেশ পুরানো সে ব্যাপরে কোন সন্দেহ নেই। 
পরিশেষে, পরম করুনাময় সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা বিদ্যালয়ের কমিটি, শিক্ষক, স্টাফ, শিক্ষার্থী (বর্তমান ও প্রাক্তন), অভিভাবক এবং শুভাকাক্সিক্ষদের ভালো রাখেন, সুস্থ রাখেন এবং আমাদের সকল কাজে সহায়তা দান করেন।